এক্সপেক্টেশান আর রিয়েলিটি পুরোপুরি আপেক্ষিক। প্রিভিয়াস রিয়েলিটির উপর এক্সপেক্টেশান গড়ে ওঠে, আবার সেই এক্সপেক্টেশান রিয়েলিটিকে প্রভাবিত করে। এখানে কোনটাকে আপনি স্বাধীন চলক ধরলে পরমুহূর্তেই তাকে পরাধীন চলক মনে হবে। ছাত্রবস্থায় অথবা কর্মক্ষেত্রে আপনাকে যারা দূর থেকে বড় পর্দায় দেখছে, তারা আপনার বনে দৌড়ানো অথবা পড়ে যাওয়া দেখবে, কিন্তু পায়ে গাছের শেকড় জড়ানো দর্শকদের একটা বিশাল অংশের দৃষ্টির আড়ালে চলে যাবে হয়ত। যেমন ছোটবেলায় মোটামুটি ভালো রেজাল্ট করলে নেক্সট স্টেজ গুলোতে আপনার উপর এক্সপেকটেশন বেড়ে যায় আপনার রেজাল্টের রিয়েলিটির জন্য। আবার সেই ইনক্রিজিং এক্সপেক্টেশান আপনার রানিং ও আপকামিং রিয়েলিটির মাঝঝানে ডিপ্রেশানের একটা দেয়াল তোলার চেষ্টা করে। থরের হাতুড়ি ছাড়াই ক্রমাগত সেই দেয়াল ভেঙ্গে সামনে যাওয়ার চেষ্টা করি সবাই। কারন এক জায়গায় দাঁড়িয়ে এই দেয়াল ভাঙ্গাই মেইন না, সবাই দৌড়াচ্ছে,আপনাকেও এই দৌড়ে টিকে থাকতে হবে।
কিছুটা পাবজির ব্লু জোনের মত। ব্লু জোনের আগে থাকতে হবে বাই হুক অর বাই ক্রুক।
থ্রি ইডিয়টস মুভিতে যখন রানছো কে ভাইরাস সবার সামনে এনে দাড় করিয়ে বলে, "রানছো আজ আমাদের সবাইকে ইঞ্জিনিয়ারিং শেখাবে। শেখাও "
তার পরের সীনের কথা মনে আছে? বোর্ডের FARHANITRATE, PRERAJULISATION এর মিনিং খুজতে স্যার সহ পুরো ক্লাস রেসে লেগে গেল।
এরকম রেসের ফর্মুলা ওয়ান ই কি খেলছিনা আমরা? কয়জন জেমস হান্ট হয়? কয়জনই বা হয় নিকি লাউডা। একজনের জন্য ট্র্যাক পার করা ইজি হলেও অন্য কারোজন্য হয়ত হয় প্রাণঘাতি।
থ্রি ইডিয়টস এর জয় যখন অনেক দিন কাজ করার পর নিজের বানানো হেলিকপ্টার টা ভাইরাসকে দেখায়, সেই সীনটার কথা মনে আছে? জয়ের গ্রামের সবাই তার গ্র্যাজুয়েশানের দিন আসবে বলে খুব এক্সাইটেড থাকে। কিন্তু কি হয় শেষ পর্যন্ত? তারা জানেনা জয়ের ব্রেইনে প্রেশার ক্রিয়েট করে মার্ডার করার কথা। ভার্সিটি প্রধানকে বলা হলে প্রতিউত্তরে বলে "একটা ছেলে প্রেশার হ্যান্ডেল করতে পারেনাই এতে আমাদের দোষ কি? জীবনে ত অনেক বাধাই আসবে "
হ্যাঁ। একদম সত্য কথা। দোষ দেওয়ার কিছু নেই। কারণ এমন কোন মানদন্ডই নেই। যেখানে পৃথিবীতে আইনের শাশনের ফাক গলে মানুষ মানুষকে প্রত্যক্ষভাবে মেরে ফেলে, সেখানে এই পরোক্ষ হত্যার কথা পরিসংখ্যানে আনার কি দরকার? এটা কি ক্রিকেট খেলা, যে, একশ রকমের ডাটার ছড়াছড়ি থাকতে হবে? তাইতো গুগোল ছাত্রদের এই প্রেশারগুলোকে সর্টেড রাখতে . edu ডোমেইনের মেইলে স্টোরেজ বাড়িয়ে 5 ট্যারাবাইট করে দিয়েছে,যেখানে আমজনতার গুগোল স্টোরেজ থাকে ১৫ গিগা।
ফিজিক্সের ১১ ডাইমেনশান আর স্ট্রিং থিউরি নিয়ে ইদানিং পড়তে খুব ভালো লাগছে। ডিসির ফ্ল্যাশ টিভি সিরিজের মত আমাদের এই ইউনিভার্সের প্যারালাল যদি কোন ইউনিভার্স থেকে থাকে, সেটা সম্পর্কে হাজার কোটি আলোকবর্ষ দূরে থেকে কল্পনায় তাদের একটা শিক্ষা ব্যাবস্থা দাড় করাতেই পারি। যেমন সেখানে সবার জন্য ইন্টারনেট সুবিধা থাকবে। সবাই কোন প্রেশার ছাড়া জ্ঞ্যান অর্জন করবে বই ঘেটে, ইন্টারনেট থেকে। কাজ শিখবে নিজের পার্সোনাল ইন্টারেস্টের উপরে। এক্সপেক্টেশান আর রিয়েলিটি নামের ভ্যারিয়েবলগুলো থাকবেনা। কিন্তু তাহলে তাদের চাকরির বাজারে রিক্রুট করবে কি ভাবে?
কোন একটা সাব্জেক্টে গ্র্যাজুয়েশান করা একটা ছেলেকে যখন ইন্টারিভিউতে ডাকা হয়, তখন ফিল্টার করার জন্য হায়ার সিজিপিএ দেখা হয়। হয়ত সেই কম্পানি প্রোগ্রামিং নিয়েই কাজ করে। কিন্তু হায়ার সিজিপিএ মানে সে তার বি এস সি লেভেলে প্রায় সবগুলো ইন্ডিভিজুয়াল সাব্জেক্টেই ভালো করেছে। এর মানে একে কম্পানিতে আনলে নির্ধারিত ফিল্ডের বাইরে এই ইন্ড্রাস্ট্রিতে আসা অন্য সমস্যাগুলোর সমাধানেও সে পার্টিসিপেট করতে পারবে।
কিন্তু প্যারালাল ইউনিভার্সে ত ভার্সিটি নেই, কোন সিজি নেউ, প্রেশার নেই। তাহলে মানদন্ড?
তারা কম্পানিতে ঢোকার সময় পুরো ৫০০ মার্কের পরিক্ষা দেয় একদম সব কিছুর উপরে। ব্যাস। প্রোগ্রামিং, ফিজিক্স,ম্যাথ সব কিছু থেকেই প্রশ্ন আসে। কেউ পারে,কেউ হয়ত পারেনা। নেক্সট বার দেয়।
সব ই চিলেকোঠায় থেকে বড় আলিশান ইমারতের দোষ খোজার চেষ্টা হয়ত। হাহাহা...
"জলের গান" এর একটা গান আছেনা?
"এমন যদি হতো
আমি পাখির মতো উড়ে উড়ে বেড়াই সারাক্ষন
পালাই বহুদুরে ... ক্লান্ত ভবঘুরে
ফিরবো ঘরে; কোথায় এমন ঘর..."
-রিফাত আহাম্মেদ
No comments:
Post a Comment